শুক্রবার, ২০ Jun ২০২৫, ১০:০০ পূর্বাহ্ন

বাড়ছে গৃহকর্মী নির্যাতন: সুরক্ষায় বিশেষ উদ্যোগ জরুরি

বাড়ছে গৃহকর্মী নির্যাতন: সুরক্ষায় বিশেষ উদ্যোগ জরুরি

আমাদের দেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর একটি বড় অংশ অন্যের বাড়িতে গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর জরিপ অনুযায়ী দেশে গৃহকর্মে নিয়োজিত শিশুর সংখ্যাও লক্ষাধিক। এদের একটা বড় অংশকে প্রতিনিয়ত নির্যাতনের শিকার হতে হয়। শুক্রবার কলাবাগানের সেন্ট্রাল রোডে এক বাসায় ৮ বছরের এক শিশু গৃহকর্মীকে নির্যাতন করে হত্যার ঘটনা ঘটে। শিশুটি মারা যাওয়ার পর মোবাইলসহ সবকিছু ফেলে লাপাত্তা হয়ে যায় গৃহকর্ত্রী। নিহত শিশুটির শরীরে অনেক নতুন ও পুরোনা আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত ১০ বছরে সারা দেশে প্রায় সাড়ে ৪শ গৃহকর্মীকে নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় বিভিন্ন থানায় দুশর মতো নির্যাতন ও অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। তাদের মধ্যে ১০ জন নিহত হয়েছেন ও দুজন ধর্ষণের শিকার হয়েছেন।
শারীরিক নির্যাতন ছাড়াও গৃহকর্তার কাছে অনেক গৃহশ্রমিক যৌন নির্যাতনের শিকার হন বলে প্রচারমাধ্যম থেকে জানা গেছে। চাকরি হারানোর ভয়ে গৃহকর্তার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে পারেন না এই নির্যাতিত শ্রমিকরা। গৃহকর্মী নির্যাতন ও হত্যা বন্ধ না হওয়ার বড় কারণ শাস্তির নজির না থাকা। সেই সঙ্গে মূলত মামলার দীর্ঘসূত্রতা অপরাধীদের বারবার উৎসাহী করছে। দ্রুত বিচার নিষ্পত্তি ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা না গেলে কখনো গৃহকর্মী নির্যাতন বন্ধ হবে না।
গৃহকর্মীদের সুরক্ষা ও কল্যাণে ২০১৫ সালে সরকার একটি নীতিমালা করলেও সেটি এখনও বাস্তবায়ন হয়নি। আইন না থাকায় এর প্রয়োগটা যথাযথভাবে হচ্ছে না। আইন হলে বিধিমালা হবে, এরপরই এটি প্রয়োগের জন্য সরকারকে চাপ সৃষ্টি করা যাবে বলে জানিয়েছেন আইনসংশ্লিষ্টরা।
আমাদের দেশে গৃহকর্মীদের কোনো নিবন্ধন নেই। গৃহকর্মী নিবন্ধন হলে তাদের সংখ্যা, বয়স ও ঠিকানা নিন্ধবন করা জরুরি। তারা ছুটি পাচ্ছে কি না, নিয়মিত বেতন পাচ্ছে কি না-সেসব বিষয় নজরদারির আওতায় আনা জরুরি। কোনো গৃহকর্মী অপরাধ করে থাকলে তাদেরও দ্রুত শনাক্ত করা যাবে। এতে গৃহকর্মী ও গৃহকর্তা উভয়ই উপকৃত হবেন।

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




© All rights reserved © 2021
Design By Rana